খেলা ডেক্সঃ
মাঠে অনেক সময় খেলোয়াড়রা মেজাজ হারান। যেটাকে বলা হয় ‘হিট অব দ্য মোমেন্ট’। ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর শনিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আউট হওয়ার পর আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরে আবার ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙেছেন। এটুকু পর্যন্ত না হয় মানা যায়।
কিন্তু হারমানপ্রিত এরপর যা করলেন, সেটাকে কিছুতেই খেলোয়াড়সুলভ আচরণ বলা যাবে না। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আম্পায়ারিং এবং বাংলাদেশ দল নিয়ে অসম্মানজনক কথা বললেন। এমনকি মাইক্রোফোনেও বললেন, এরপর থেকে বাংলাদেশে খেলতে এলে আম্পায়াররা তাদের বিপক্ষে থাকবে ধরেই খেলতে আসতে হবে।
একজন পেশাদার খেলোয়াড় এভাবে কি বলতে পারেন? সেটাও আবার জনসম্মুখে! হারমানপ্রিতের অবশ্য সেই তুলনায় বড় শাস্তি হচ্ছে না। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ৪টি ডিমেরিটস পয়েন্ট।
আজ রোববার সকালে টিম হোটেলে ম্যাচ রেফারি আকতার আহমেদ শিপার এ শাস্তি দিয়েছেন। যা আইসিসির প্রেস রিলিজ আকারে আসবে মিডিয়ায়।
এখানেও হারমানপ্রিতের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি সশরীরে শুনানিতে উপস্থিত হননি। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনোরকম চেষ্টাও করেননি। শাস্তির কপি তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে জানা গেছে, ভারতীয় দলের ম্যানেজার তাৎক্ষণিকভাবে ডিমেরিটস পয়েন্ট কমানোর অনুরোধ করেছিলেন। তবে তা গ্রহণ করা হয়নি। ম্যাচ রেফারির শাস্তি আইসিসির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
বাংলাদেশের সাথে তিন ম্যাচের সিরিজ জিততে না পারাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক। আম্পায়ারের খেলা পরিচালনায় চরম অসন্তুষ্ট ছিলেন হারমানপ্রিত।
মারুফা আক্তারের বলে শেষ ব্যাটার মেঘনা সিংয়ের কট বিহাইন্ড সিদ্ধান্ত কিছুটা সময় নিয়ে দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। ভারতের দুই ব্যাটার মাঠ না ছেড়ে তখনও আপত্তি জানান। এর আগে নিজের আউটের সিদ্ধান্ত না মেনে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন হারমানপ্রিত।
ম্যাচ শেষে হলে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়ও চরম দৃষ্টিকটু আচরণ এবং স্বাগতিকদের কটাক্ষ করেন হারমানপ্রিত। ম্যাচ টাই হওয়ার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক বলে বসেন, ‘প্যাথেটিক আম্পায়ারিং’।
এরপর ট্রফিসহ দুই দলের একসঙ্গে ছবি তোলার সময়ও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করেন হারমানপ্রিত। বাংলাদেশের ক্রিকেটাদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘তোমাদের দলের সাথে আম্পায়ারদেরও ডাকো। তারাওতো জিতেছে।’
এর আগে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজকের খেলা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। ক্রিকেটের বাইরেও আজ যে ধরনের আম্পায়ারিং হলো, এটা খুব অবাক করার মতো।’
এরপর বলেন, ‘এর পরে বাংলাদেশে আসার আগে এই ধরনের আম্পায়ারিং হবে, এটা ধরে নিয়ে সেভাবে প্রস্তুত হয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার মাঠে উপস্থিত থাকার পরও তাকে পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে কেন রাখা হয়নি, এই প্রশ্নও তুলতে দেখা যায় হারমানপ্রিতকে।