মহানবী (সাঃ)-এর পরিবারের কটুক্তি প্রতিবাদে শাস্তি দাবি করে কটুক্তি কারির পরিবারকে বয়কট করলেন হিন্দু সমাজ

তাহেরপুর রাজশাহী

মো: ইসরাফিল হোসেন, রাজশাহী:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে গত (২৮ নভেম্বর) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তি করে ফেসবুকে মন্তব্য করা শ্রী পার্থদেব নামে এক হিন্দু কিশোর।

সে তাহেরপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সাম্পাদক ও চাউল ব্যবসায়ী শ্রী কালিপদ সাহার ছেলে।

( ৩০ নভেম্বর) রাত ৮.৩০ ঘটিকায় তাহেরপুর পঞ্চ মন্দীরে তাহেরপুর হিন্দু সমাজের উদ্যোগে তাহেরপুর পঞ্চ মন্দিরের সিঃ সহ সভাপতি বাবু তাপস কুমার দাস পিন্টুর সভাপতিত্বে ও পঞ্চ-মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সত্যজিৎ রায় তোতার পরিচালনায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) -এর পরিবার সম্পর্কে কটূক্তি করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে পার্থ দাসের শাস্তি দাবি করে এবং তার পরিবার শ্রী কালিপদ সাহা কে সামাজিকভাবে বয়কট করেন এবং সকল হিন্দুদের কঠোর হুঁশিয়ারি করে দেন যে কালিপদ সাহার সাথে কোন প্রকার সম্পর্ক না থাকে।

যদি কেউ গোপনে পার্থ দাসের পরিবারের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক বা লেনদেন করে তাকে কঠিনভাবে তার শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এই সময় হিন্দু সমাজের পক্ষ হতে পঞ্চ মন্দিরের সিঃ সহ সভাপতি তাপস কুমার দাস পিন্টুর বলেন, আমরা কোনদিন তাহেরপুরে হিন্দু-মুসলিমের কোন সমস্যার ঘটনা শুনিনি , এক সময় ভারতের বাবরি মসজিদ নিয়ে একটা সমস্যার কারণে তাহেরপুর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু সেসময় অত্র এলাকার চেয়ারম্যান ওয়াহিদ প্রফেসর এ বিষয়টি সুন্দরভাবে সমাধান করেছিলেন ।

এরপর থেকে আমরা তাহেরপুরে হিন্দু-মুসলিম একত্রিত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলাম কিন্তু গতদিনের আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি কুলাঙ্গার সন্তান কালিপদ সাহার পুত্র পার্থ ফেসবুকে মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লামক- এর পরিবারকে কটুক্তি করে একটি নোংরা পোস্ট করে যা মস্ত বড়ো অপরাধ।

ফলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাহেরপুরে হিন্দু মুসলমানদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে,এ সময় ওয়াহেদ প্রফেসরের সুযোগ্য সন্তান শামসুর রহমান মিন্টু ও তাহেরপুরে জামায়াতের আমির শহীদুজ্জামানীর সহ তাহেরপুরের মুসলিম সমাজ আমাদের প্রতি যে সহানুভূতি দেখিয়েছে ও সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেছে আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

আমি আরো বলতে চাই আমরা যারা অভিভাবক আছি তাদের প্রতি আমার বিশেষ আবেদন আপনারা আপনাদের ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল দিলে অবশ্যই খোঁজ রাখবেন তারা কি করছে? মোবাইলে কি দেখছে?মোবাইল নিয়ে কোথায় যাচ্ছে, ঘরে কখন ফিরছে ? ঘরে বাইরে গিয়ে কি করছে?

মোবাইলের উপকারিতা থাকলেও এর ক্ষতির দিক অনেক বেশি।

সর্বোপরি কথা হচ্ছে , যে পরিবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে নিয়ে কটুক্তি করেছে সেই পরিবারকে আমরা হিন্দু সমাজের পক্ষ থেকে সকলে বয়কট করলাম , ইতিপূর্বেও তারা বিভিন্ন অঘটন ঘটিয়েছেন এবং তারা আমাদের সমাজকে মানেন এবং আমাদের মুরুব্বিদেরকে মানে না , তো আমরা শার্বিকভাবে তাহেরপুরে সকল হিন্দু সমাজ আজ থেকেই পার্থদেবের পরিবার তথা কালিপদ সাহাকে সামাজিকভাবে বয়কট ঘোষণা করলাম।

এখানে আজকে যারা উপস্থিত আছেন তাদের সর্ব সম্মতিক্রমে আজ থেকে আমরা পার্থদেব এর পরিবারকে বয়কট ঘোষণা করলাম এবং আমি এটা বলতে চাই গোপনে যদি কেউ তার পরিবারের সাথে কোন প্রকার সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে তাকে আমরা সামাজিকভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

তাছাড়া যদি সেই পরিবার কোনদিন শুধরে ফেরত আসতে পারে তাহলে আমরা তাদের ব্যাপারে চিন্তা করে দেখব।

তাদের পরিবার মানুষকে সম্মান দিতে জানে না তারা সামাজিকভাবে অভদ্র এবং তাদের পরিবারকে নিয়ে আমরা কোন ধরনের ঝামেলায় পড়তে চাই না।

তাহেরপুরে আমরা হিন্দু মুসলমান সবাই মিলে ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করি। একটি পরিবারের জন্য আমরা সেই ভাতৃত্ববোধ নষ্ট করতে চাই না।

সুতরাং নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর পরিবারকে এই ধরনের কটুক্তি করার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং পার্থদেবের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।

এই সময় অন্যান্যরা বলেন, এই কুলাঙ্গার এমন একটি শব্দ ব্যবহার করেছে যে আমরা হিন্দুরা মুখে আনতে পারবো না। তাহেরপুরে হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই তারা একসাথে চলাচল করে নেই কোন ভেদাভেদ, তারা আরও বলেন, আমরা পার্থদেবের বিচার চাই, কঠোর শান্তির দাবি করেন উপস্থিত বক্তরা।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাবু সুধীর কুমার সরকার- সাঃ সম্পাদক, তাহেরপুর ব্রহ্মামন্দির, বাবু শ্যামল কুমার সাহা সভাপতি, তারেরপুর ব্রহ্মা মন্দির, বাবু চিরঞ্জিব রায় সাঃ সম্পাদক, তাহেরপুর দুর্গামন্দির ,বাবু পুণ্য চন্দ্র মন্ডল , বাবু কার্তিক সাহা সাবেক কাউন্সিলর, ৩ নং ওয়ার্ড, বাবু সন্দ্বিপরায় টিংকু, বিজন চন্দ্র দাস, অনুপ কুমার, অমিত হালদার, মোহন চক্রবর্ত্তী; চন্দ্র হামাদার, হারান কর্মকার,প্রভাত সাহা, প্রশান্ত সাহা, বিমল সাহা, সুব্রত সাহা, দেবঘ্নত সাহা, অধ্যাপক রতন কুমার সাহা, সঞ্জয় প্রামানিক, সাধন দাস, নন্দ দাস সহ আরও অনেকে।

এই বিষয়ে তাহেরপুর তদন্ত কেন্দ্রের আইসি সোহাইল বলেন, হিন্দুদের এমন উদ্যোগে সাধুবাদ জানাই, সেই সাথে সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহবান, এবং বলেন যে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত আছে ও বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *