আল্লাহর শোকরের প্রতিদান ও কুফরের পরিণতি

আল্লাহর শোকরের প্রতিদান ও কুফরের পরিণতি

ইসলাম

ইসলামীক ডেক্সঃ

সুরা দাহর‌ কোরআনের ৭৬তম সুরা। সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৩১ এবং রুকু সংখ্যা ২। মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরা ‘ইনসান’ নামেও পরিচিত। সুরা দাহরের শুরুতে আল্লাহ মানুষকে তার সৃষ্টির প্রক্রিয়া স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, মানুষ এক সময় উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না।

আল্লাহ মানুষকে মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছেন, দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি দান করেছেন, যেন মানুষকে পরীক্ষা করা যায়। এরপর তিনি মানুষকে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন সে চাইলে কৃতজ্ঞ বা অকৃতজ্ঞ হতে পারে।

সুরা দাহরের ১-১৩ আয়াতে আল্লাহ বলেন, “কাল-প্রবাহে মানুষের উপর এক সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিলনা। আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু হতে।

তাকে পরীক্ষা করার জন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি; হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে। আমি অকৃতজ্ঞদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি শৃংখল, বেড়ি ও লেলিহান অগ্নি। নিশ্চয় সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানপাত্র থেকে যার মিশ্রণ হবে কাফূর; এমন এক ঝর্ণা যা থেকে আল্লাহর বান্দাগণ পান করবে, তারা এটিকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে।

যারা মানত পূরণ করে আর সেই দিনকে ভয় করে যার অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী। তাদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাবার দান করে এবং বলে, শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে খাবার দান করি, আমরা তোমাদের নিকট এর প্রতিদান চাইনা, কৃতজ্ঞতাও নয়।

আমরা আশংকা করি আমাদের রবের নিকট হতে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের। পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করবেন সেই দিনের অনিষ্টতা হতে এবং তাদেরকে দিবেন উৎফুল্লতা ও আনন্দ। আর তাদের ধৈর্যশীলতার পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে দেয়া হবে জান্নাত ও রেশমী বস্ত্র। সেখানে তারা সমাসীন হবে সুসজ্জিত আসনে, তারা সেখানে অতিশয় গরম ও অতিশয় শীত অনুভব করবেনা।”

এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই:

১. মানুষের ওপর আল্লাহর অনু্গ্রহ ও করুণা অপরিসীম। মানুষ সব সময়ই আল্লাহর মুখাপেক্ষী। মানুষের উচিত নিজের সৃষ্টির প্রক্রিয়া মনে রাখা, সে কতটা অক্ষম ও অসহায় তা অনুভব করা এবং অহংকার না করা। আল্লাহর ‍কৃতজ্ঞতা আদায় করা. অকৃতজ্ঞ না হওয়া।

২. মানুষের ওপর শরিয়ত পালন অপরিহার্য হওয়ার জন্য সুস্থ বুদ্ধির পাশাপাশি শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির যে কোনো একটি সুস্থ থাকাও জরুরি।

৩. মানুষের সামনে দুটি পথ আছে। মানুষ যে পথ অনুসরণ করবে, ওই পথ তাকে তার পরিণতিতে নিয়ে যাবে। হেদায়াতের পথ নিয়ে যাবে জান্নাতে, ভ্রষ্টতার পথ নিয়ে যাবে জাহান্নামে।

৪. কেউ কোনো নেক কাজের মানত করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব। তবে কোনো পাপ কাজ করার মানত করলে তা পূরণ করা যাবে না।

৫. অভাবগ্রস্তদের খাবার খাওয়ানো বড় পুণ্যের কাজ। মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে যে কোনো অসহায়-অভুক্ত মানুষকে খাবার খাওয়ালে আল্লাহ তার উপযুক্ত প্রতিদান দান করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *