ভূমিকম্প হলে যে দোয়া ও আমল করবেন

ভূমিকম্প হলে যে দোয়া ও আমল করবেন

ইসলাম

ইসলামীক ডেক্সঃ

ভূমিকম্প মহান আল্লাহর একটি নিদর্শন। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাদের স্মরণ করিয়ে দেন তার শক্তি ও ক্ষমতার কথা, তাদের ‍দুর্বলতা, হীনতা ও মুখাপেক্ষিতার কথা। ভূমিকম্পের মতো যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপদের সময় আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা উচিত। আল্লাহর কাছে বিনীত হয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ বলেন,

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا إِلَى أُمَمٍ مِنْ قَبْلِكَ فَأَخَذْنَاهُمْ بِالْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ لَعَلَّهُمْ يَتَضَرَّعُونَ . فَلَوْلَا إِذْ جَاءَهُمْ بَأْسُنَا تَضَرَّعُوا وَلَكِنْ قَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ . فَلَمَّا نَسُوا مَا ذُكِّرُوا بِهِ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ أَبْوَابَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا فَرِحُوا بِمَا أُوتُوا أَخَذْنَاهُمْ بَغْتَةً فَإِذَا هُمْ مُبْلِسُونَ

আর আমি তোমাদের আগের জাতিসমূহের কাছে বহু রাসুল পাঠিয়েছি, আমি তাদের ওপর ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও রোগব্যাধি চাপিয়ে দিয়েছি, যেন তারা নম্রতা প্রকাশ করে আমার সামনে নতি স্বীকার করে। তারা কেন বিনীত হয়নি, যখন তাদের ওপর আমার আজাব আসল? কিন্তু তাদের হৃদয় নিষ্ঠুর হয়ে গিয়েছে। আর তারা যা করত, শয়তান তাদের জন্য তা শোভিত করেছে। তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, আমি তাদের উপর সব কিছুর দরজা খুলে দিলাম। অবশেষে যখন তাদেরকে যা প্রদান করা হয়েছিল তার কারণে তারা উৎফুল্ল হল, আমি হঠাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম। তারা তখন হতাশ হয়ে গেল। (সুরা আনআম: ৪২-৪৪)

এ আয়াতের আলোকে আলেমরা বলেন, ভূমিকম্প হলে বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া, দোয়া করা, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ও সদকা করা মুস্তাহাব। যেমন সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সময় নামাজ আদায় করা ও দোয়া করা মুস্তাহাব।

রাসুল (সা.) তীব্র বাতাস ও ঝড়ের সময় পড়তেন,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسأَلك خَيرهَا وَخير مَا فِيهَا وَخير مَا أرْسلت بِهِ وَأَعُوذ بك من شَرها وَشر مَا فِيهَا وَشر مَا أرْسلت بِهِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ও খাইরা মা ফীহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি ওয়া আউজুবিকা শাররাহা ওয়া শাররা মা ফীহা ওয়া শাররা মা উরসিলাত বিহি।
অর্থ: হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ চাই, এর মধ্যে যে কল্যাণ আছে সেটা চাই এবং যে কল্যাণ দিয়ে এটাকে পাঠানো হয়ে তা চাই এবং আমি আপনার কাছে এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই, এর মধ্যে যে অনিষ্ট অন্তর্ভুক্ত আছে তা থেকে আশ্রয় চাই এবং যে অনিষ্টসহ এটাকে পাঠানো হয়েছে তা থেকে আশ্রয় চাই। (সহিহ মুসলিম)

ভূমিকম্পের জন্য বিশেষ কোনো দোয়া যেহেতু রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত নেই, তাই ভূমিকম্পের সময় এ দোয়াটি আমরা পড়তে পারি। নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী অন্যান্য দোয়ার মাধ্যমেও আল্লাহর রহমত, সাহায্য ও বিপদ থেকে মুক্তি চাইতে পারি। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত এ রকম দুটি দোয়া হলো,

১. এ দোয়াটি আল্লাহর নবি ইউনুস (আ.) বিপদে পড়ে বারবার পড়েছিলেন এবং আল্লাহ তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করেছিলেন,

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ-জালিমিন।
অর্থ: তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তুমি পবিত্র সুমহান; আমি জালিমদের দলভুক্ত। (সুরা আম্বিয়া: ৮৭)

২. রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রতিদিন ভোরে ও প্রতি সন্ধ্যায় এ দোয়াটি যে তিনবার পাঠ করবে, কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না,

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি, ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।
অর্থ: ‌আল্লাহ তাআলার নামে, যার নামের বরকতে আকাশ ও মাটির কোনো কিছুই কোনো অনিষ্টতা করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *