রামেকে গৃহবধূর লাশ ফেলে পালালেন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা

রামেকে গৃহবধূর লাশ ফেলে পালালেন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীতে মাহজুবা খাতুন আখি (২৩) নামের এক গৃহবধূর লাশ রামেক হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে তার শুশ্বর বাড়ির লোকেরা। গত সোমবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে রামেক হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা আরএমপি কাশিয়াডাঙ্গা থানার হাড়ুপুর মৃত কাশিম শেখের ছেলে আরশাদ আলী ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিৎ করেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর আগে কাশিয়াডাঙ্গা হাড়ুপুরের আরশাদ আলীর মেয়ে মাহজুবা খাতুন আখি (২৩) বিয়ে হয় কাশিয়াডাঙ্গা কাঠালবাড়িয়া সজিবরের ছেলে আতিকুল ইসলাম টনির সাথে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে টনি ও তার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি আখিকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক ও মারপিট করে নির্যাতন করতেন। গত সোমবার ১৫ মে রাত ৩ টার দিকে পলি বেগম নামের এক প্রতিবেশী নারী হটাৎ গৃহবধূ আখির পিতা আরশাদ আলীর বাড়িতে গিয়ে খবর দেই তার মেয়ে আখি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে।

তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেছে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। খবর পেয়ে দ্রুত রাতে রামেক হাসপাতালে গিয়ে আরশাদ দেখেন, তার মেয়ে মৃত অবস্থায় রামেক হাসপাতালের ট্রলির উপরে রয়েছে। গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় রেখে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারেন তিনি। পরে গৃহবধূর লাশ রামেক হাসপাতালে মর্গে নিয়ে ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে গৃহবধূর লাশ হাড়ুপুর গোরস্থানে দাফন কাজ সম্পুর্ণ করে তার পরিবার।

নিহত গৃহবধুর পিতা আরশাদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৫ মে রাত ১২ টা থেকে রাত আড়াইটার মধ্যে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। হত্যা কান্ড ধামাচাপা দিতে তার স্বামী টনি, তার শ্বশুড়ি রাশিদা, শ্বশুর সজিবর, কাঠালবাড়িয়া এলাকার কামরুল ইসলাম কামুসহ অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জন আত্নহত্যার নাটোক সাজিয়েছে।

দাবি করে আরো বলেন, আমার মেয়ে কে হত্যা যদি না করে তাহলে রাতে আমার মেয়ের আত্নহত্যার খবর আমাকে জানাতেন তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। তাছাড়া রাতে শুধু তার চাচাতো শ্বাশুড়ি নাসিমা ও তার ননোদের স্বামী কামরুল রামেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার আখিকে মৃত ঘোষনা করার পরে তারা পালিয়ে যেতো না। আমার মেয়ে কে তার স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়িসহ অন্যানদের সহায়তাই পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়ের হত্যা কারিদের ফাঁসি চাই আমি।

এ বিষয় আরএমপি কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারনা করেছে গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকদের প্ররোচনায় আত্নহত্যা করেছে গৃহবধূ আখি। এ জন্য আত্নহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এজাহার নেয়া হয়েছে। নিহত আখির পিতা থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে সোমবার সকালে আত্নহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছে। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে না আত্নহত্যায় প্ররোচনা করা হয়েছে। যদি হত্যা কান্ড প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় তাহলে হত্যা মামলা হিসাবে মামলা হবে আসামীদের বিরুদ্ধে বলে জানান ওসি।

ওসি বলেন, পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আশা করি দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *