মোবাইলে কোরআন শুনলে কি সিজদা ওয়াজিব হয়?

ইসলাম

ইসলামীক ডেক্সঃ

তিলাওয়াতের সিজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হলো কোনো বুঝমান, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে সরাসরি সিজদার আয়াত শোনা। তাই মোবাইল, কম্পিউটারসহ যে কোনো মাধ্যমে রেকর্ডকৃত তিলাওয়াত শোনার সময় সিজদার আদায় শুনলে সিজদা ওয়াজিব হয় না।

টেলিভিশন, রেডিও, ইউটিউব বা ফেসবুক লাইভে যদি সরাসরি কোরআন তিলাওয়াত সম্প্রচারিত হয়, তাহলে সিজদার আয়াত শোনার কারণে সিজদা ওয়াজিব হবে। প্রচারিত তিলাওয়াত সরাসরি না হয়ে রেকর্ডকৃত হলে সিজদা ওয়াজিব হবে না।

তবে যে কোনো মাধ্যমে সিজদার আয়াতের রেকর্ডকৃত তিলাওয়াত শুনলেও সিজদা করে নেওয়া উত্তম।

তিলাওয়াতের সিজদা কোরআনের হক এবং গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত। সিজদার আয়াত তিলাওয়াতের পর নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবায়ে কেরাম খুবই গুরুত্বের সাথে সিজদা আদায় করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন,

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ السَّجْدَةَ وَنَحْنُ عِنْدَهُ، فَيَسْجُدُ وَنَسْجُدُ مَعَهُ، فَنَزْدَحِمُ حَتّٰى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا لِجَبْهَتِهِ مَوْضِعًا يَسْجُدُ عَلَيْهِ.

নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সামনে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন তারপর সিজদা করতেন। আমরাও তার সাথে সিজদা করতাম। তখন এতো ভিড় হতো যে, আমাদের মাঝে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না। (সহিহ বুখারি: ১০৭৬)

সিজদার আয়াত পড়ে সিজদা করার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন,

إِذَا قَرَأَ ابْنُ آدَمَ السَّجْدَةَ فَسَجَدَ اعْتَزَلَ الشَّيْطَانُ يَبْكِي يَقُولُ يَا وَيْلَهُ أُمِرَ ابْنُ آدَمَ بِالسُّجُودِ فَسَجَدَ فَلَهُ الْجَنَّةُ وَأُمِرْتُ بِالسُّجُودِ فَأَبَيْتُ فَلِيَ النَّارُ

মানুষ যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা দেয়, শয়তান তখন কাঁদতে কাঁদতে দুরে সরে পড়ে এবং বলতে থাকে হায়! দুর্ভাগ্যা! মানুষকে সিজদার নির্দেশ দেওয়া হলো, তারা সিজদা করলো, এর বিনিময়ে তারা জান্নাত লাভ করবে। আমাকে সিজদার নির্দেশ দেওয়া হলে কিন্তু আমি তা অস্বীকার করেছিলাম, ফলে আমি যাবো জাহান্নামে। (সহিহ মুসলিম: ৮১)

ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতে কোরআনে এ রকম ১৪টি আয়াত আছে যেগুলো পড়লে বা শুনলে সিজদা দেওয়া ওয়াজিব। আয়াতগুলো হলো (১) সুরা আরাফের ২০৬ নং আয়াত, (২) সুরা রাদের ১৫ নং আয়াত, (৩) সুরা নাহলের ৪৯ নং আয়াত, (৪) সুরা বনি ইসরাইলের ১০৯ নং আয়াত, (৫) সুরা মারিয়ামের ৫৮ নং আয়াত, (৬) সুরা হজের ১৮ নং আয়াত, (৭) সুরা ফোরকানের ৬০ নং আয়াত, (৮) সুরা নামলের ২৬ নং আয়াত, (৯) সুরা সিজদার ১৫ নং আয়াত, (১০) সুরা সোয়াদের ২৫ নং আয়াত, (১১) সুরা হা-মিম সিজদার ৩৮ নং আয়াত, (১২) সুরা নাজমের ৬২ নং আয়াত, (১৩) সুরা ইনশিকাকের ২১ নং আয়াত এবং (১৪) সুরা আলাকের ১৯ নং আয়াত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *