সুনামগঞ্জ থেকে,আমির হোসেন:
সুনামগঞ্জ চাঞ্চল্যকর শাকিব রহমান হত্যাকান্ডে জড়িত মোশাহিদ তালুকদার নামে আরো এক পলাতক পলাতক আসামিকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর জোনাল গোয়েন্দা টিমের সদস্যদের সহযোগিতায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশের একটি টিম শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় গ্রিণ রোডের সিটি ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলের একটি কক্ষ হতে তাকে গ্রেফতার করেছে।
মোশাহিদ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া বাঁশপাড়ার মৃত সাদেক আলী তালুকদারের ছেলে ও শাকিব হত্যা মামলার পলাতক শীর্ষ আসামি কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসেন তালুকদারের সহোদর ভাই।
শনিবার বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর জোনাল গোয়েন্দা টিমের উপ পুলিশ কমিশসার (এডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম মোশাহিদকে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এরপুর্বে শুক্রবার রাতে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ার খলা নামক এলাকা থেকে বুলবুল আহমদ নামে এক আসামিকে তাহিরপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
বুলবুল তাহিরপুর উপজেলার উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের পূর্বদৈল (গড়কাটি) গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
এ নিয়ে শাকিব হত্যা মামলায় শনিবার সকাল অবধি দুই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল সোমবার রাতে উপজেলার ঘাগটিয়া চক বাজার থেকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে শাকিব রহমানকে গ্রামের বাঁশপাড়ার প্রভাবশালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি, তাহিরপুর কয়লা আমদানিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসেন তালুকদারের লোকজন অপহরণ করে মোশারফের বাড়িতেই আটকে রেখে রাতভর চার হাত পা ভেঙ্গে নির্মমভাবে খুন করে।
এরপর রাতে পুলিশ ঘটনা জেনে ফেলায় লাশ গুমের চেষ্টা থেকে সড়ে এসে কালা বাহিনীর তিন সহযোগীকে দিয়ে চিকিৎসার অজুহাতে শাকিবের মরদেহ প্রথমে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে মঙ্গলবার ভোররাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে আসে।
এমন আলোচিত ও বর্বোরোচিত হত্যকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক দৈনিক ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হলে সারা দেশব্যাপী নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভের ঝড় উঠে।
নিহত শাকিবের মা উপজেলার ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের তেরাবজান বেগম বলেন, বৈশাখী ধান কাটা শেষে (বৈশাখ মাসের শেষে) আমার ছেলেকে বিয়ে করানোর কথা ছিলো। আমার ছেলের বিয়ের পিঁড়িতে আর বসা হল না, কালা বাহিনী মোশারফ হোসেনের খুনী চক্রের সদস্যরা কেড়ে নিল আমার বুকের মানিক শাকিবকে।
আমি একজন হতভাগিনী মা হিসাবে আমার ছেলের হত্যকান্ডের মামলাটিকে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকা ভুক্তিকরণ, আদালতে দ্রৃত চার্জশীট প্রদান ও হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবি রাখছি জাতীর জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপির নিকট।
নিহত শাকিব রহমানের পিতা উপজেলার ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের মুজিবুর রহমান ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতেই কালাবাহিনী প্রধান মোশারফসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্’র বরাত দিয়ে জানায়, মামলা তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে, দ্রততম সময়ের মধ্যে শাকিব হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকের মামলাটির তদন্তের অগ্রগতি,আসামিদের গ্রেফতার সম্পর্কে অবহিত করা হবে।