নড়াইলে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে হামলায় যুবলীগ কর্মী নিহত

জাতীয়

মোঃ আজিজুর বিশ্বাস,স্টাফ রিপোর্টার:

যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় আজাদ শেখ (৩২) নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাতে উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের পেড়লী গ্রামের মোহসিন চৌরাস্তায় হামলায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

পরে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আজাদ শেখ ওই ইউনিয়নের পেড়লী উত্তর পাড়া গ্রামের সালাম শেখের ছেলে ও পেড়লী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদ শেখের বড় ভাই।

আজাদ যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পেড়লী গ্রামের আনিসুল ইসলাম বাবু শেখ ও শহীদুল ভূঁইয়ার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

শেখদের নেতৃত্ব দেন বাবু শেখ এবং ওই গ্রামের মোল্লা ও ভূঁইয়াদের নেতৃত্ব দেন শহীদুল ভূঁইয়া। আনুমানিক ৩/৪ দিন আগে ভূঁইয়া গ্রুপের লোকজনদের পেড়লী বাজার থেকে অপমান অপদস্থ করে বের করে দেন বাবু চেয়ারম্যান গ্রুপের লোকজন। এর ধারাবাহিকতায় এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে ওই গ্রামের মোহসিন মোড়ে যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে আজাদ শেখের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয় তাকে।

পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আজাদকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ সাবেক চেয়ারম্যান বাবু শেখের সমর্থিত কর্মী ছিলেন এ ঘটনায় নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি খুলনা মেডিকেলে উপস্থিত হন।

পরে তিনি যুবলীগ কর্মী হত্যায় জামায়াত-বিএনপি জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন বলেন আজাদ শেখের মৃত্যুর খবরে পেড়লী গ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ঘটনা জানামাত্রই পুলিশের একাধিক টিম পেড়লীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তবে কেউ এ ঘটনাকে পুঁজি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধেও শক্ত অবস্থানে যাবে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *