রাজশাহী টাইমস ডেক্সঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ক্রিকেট বল গায়ে লেগে শিশু আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুদল গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে। এই সময় ৫টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
রোববার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদের এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব থানার পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে।
আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। জিলানী নামের একজনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং ৫ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুদিন আগে মিয়াচাঁন খার বাড়ির ছেলেরা ফুলিমিয়া গোষ্ঠীর বাড়ির পাশে ক্রিকেট খেলতে আসে। খেলার সময় ক্রিকেটের বল মাথায় লেগে ফুল মিয়ার বাড়ির একটি শিশু আহত হয়।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়ায়। এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়।
কিন্তু শনিবার (৬ জুলাই) ফুলমিয়ার বাড়ির কিশোর নিহিত মিয়াবাড়ির মাঠে গেলে তাকে মিয়াচাঁন মিয়ার বাড়ির লোকজন মারধর করে। এদিন বিকেলে ইব্রাহিম মিয়া নামের আরেক বয়স্ক লোককে মারধরের ঘটনা ঘটনা ঘটলে উত্তেজনা দেখা দেয়।
রোববার সকালে মিয়াচাঁন মিয়ার বাড়ির লোকজন ফুলমিয়ার বাড়িতে হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষ ইটপাটকেল, রেলের পাথর ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ব্যাপারে ফুলমিয়ার বাড়ির শাহ আলম বলেন, তাদের ছেলেরা ক্রিকেট বল মেরে আমার বাড়ির একটি ছোট শিশুর মাথা ফাটিয়ে দেয়। এই ব্যাপারে আমরা কোন কথাই বলিনি। তবুও পরের দিন ছেলেরা ক্রিকেট খেলতে গেলে তাদের নিষেধ করা হয়। এই নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া হয়।
পরে বিষয়টি চেয়ারম্যান মীমাংসা করে দেন। কিন্তু শনিবার আমার বাড়ির নিহিত নামের একটি ছেলে তাদের এলাকায় গেলে তাকে মারধর করে। আবার বিকেলে আমার বাড়ির ইব্রাহিম নামের এক মুরুব্বিকে মারধর করে তারা। এই নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। রোববার সকালে পরিকল্পিত ভাবে মিয়াচাঁন মিয়ার লোকজন আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালালে সংঘর্ষ বাধে।
কিশোর নিহিত বলেন, প্রথম দফা ঝগড়া মীমাংসা হওয়ার পর রোববার সকালে আমি ওই এলাকায় গেলে আমাকে মারধর করে। আবার বিকেলে তারাই আমাকে ও ইব্রাহিম নামের আমার এক মুরুব্বিকে মারধর করে। আমরাও একজনকে মারধর করলে এই নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি আমার ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষের পাঁচজন করে দশজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরপর কোন ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে পুলিশ।