পুঠিয়ায় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীর ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল!

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার:

সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভাগের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। আর এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার এক গ্রাহকের কাছ থেকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দুই জন কর্মচারীর ঘুষ নেবার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমন সময় ঘুষ নেওয়ার ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে, যখন সারাদেশে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভাগ ব্যাপকভাবে চাপে রয়েছে। এই সময় ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়াতে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ গ্রাহকরা।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পুঠিয়া জোনাল অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীর ঘুষ গ্রহণের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পুঠিয়া জোনাল অফিসের দুজন কর্মচারী, সোহাগ হোসেন ও তার আরেকজন সঙ্গী গ্রাহকের মিটারের সমস্যা রয়েছে বলে টাকা দাবি করে। পরে ওই গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ওই দুই কর্মচারীর হাতে টাকা তুলে দিতে বাধ্য হন। পরে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ওই দুই কর্মচারী সেখান থেকে শটকে পড়ে।

জানা যায়, উপজেলার পূর্ব ধোপাপাড়ার, কারিকর পাড়া গ্রামের, ব্যবসায়ী আজাহার আলীর মিটারের সমস্যা রয়েছে বলে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পুঠিয়া জোনাল অফিসের ওই দুই কর্মচারী দাবি করে। পরে ১২০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে বিদ্যুৎ অফিসের ওই দুই কর্মচারী‌। ভিডিওতে এমনটাই দেখা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আজহার আলী জানান, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ওরা আমার কাছ থেকে অন্যায় ভাবে টাকা দাবি করে, লাইন কেটে দেয়া ও জরিমানা করার ভয় দেখায়, এরপর আমি তাদের কাছে বারোশো টাকা দেই। ওই ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে পল্লী বিদ্যুতের ওই কর্মচারীরা অন্য একজন ব্যক্তির মাধ্যমে ১১০০ টাকা আমার কাছে ফিরিয়ে দেয়। এরপর বেশ কয়েকবার পল্লী বিদ্যুতের অনেক লোকজন আমার কাছে আসে ও কথা বলে চলে যায়।

এই ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার মোঃ শামীম হোসেন তিনি জানান, এই ধরনের বেশ কয়েকটা ঘটনার কথা লোক মুখে শুনেছি। এই বিষয়ের ভিডিওটি আছে বলে তা এখন স্পষ্ট হচ্ছে। তবে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরাসরি গ্রাহকদের সাথে কাজ করলে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো হয়তো সম্ভব।

কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দেখেছি স্থানীয়ভাবে কিছু দালাল রেখে তা দিয়ে তারা কাজ করে। যেমন আমাদের এলাকার লন্ড্রি বাবু নামের একজন রয়েছে সরাসরি এসব কার্যক্রমের সাথে জড়িত বলে অনেক কথা শোনা যায়। এই ঘটনার পরে অনেকেই বলছেন তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১, পুঠিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ইয়াকুব আলী শেখ বলেন, গ্রাহকের মিটারের কাছে কোন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পয়সা লেনদেনের অনুমতি নেই। টাকা পয়সা যথাযথ অফিসের লেনদেন করতে হবে। যদি এই ধরনের কোন কর্মকান্ড কেউ ঘটিয়ে থাকে তার দায় একান্তই তার। বিষয়টি জানলাম তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ওই ঘটনায় জানতে চাইলে মুঠোফোনে প্রকৌশলী, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার, মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, এভাবে ঘুষ গ্রহনের নিয়ম নেই। যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকেন তাহলে, অবশ্যই সে অন্যায় করেছে। যদি কেউ এই বিষয়ে অভিযোগ জানায়, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *