নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
সম্প্রতি রাজশাহী বাগমারা উপজেলার বড় বিহানলী ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তহসিলদার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি খাস খতিয়ানের ৪০ বিঘা খাস জমি ভুয়া হোল্ডিং খুলে তা সাদ্দাম নামে এক ব্যক্তিকে অনলাইনে অনুমোদন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। যা বিভিন্ন অনলাইন ও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
বাগমারা উপজেলার ১৮৮ নং কয়া মৌজার (২২ বিঘা) ধানি জমির ভুয়া হোল্ডিং খুলে খাজনা আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে দেখা য়ায় কয়া মৌজার ৭.২৮ একর (২২ বিঘা) খাস খতিয়ানভুক্ত ধানি জমির ভুয়া হোল্ডিং খুলে রোকসানা নামে এক ব্যক্তিকে অনলাইনে অনুমোদন করে দিয়েছেন বহাল তবিয়তে থাকা তহসিলদার মোস্তাফিজুর রহমান।
এবিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কয়া মৌজার জে এল নম্বর-১৮৮- এ ৮১১২২৩০২৬৪৪৫ নম্বর দাখিলায় ৭ একর ২৮ শতাংশ জমি জালিয়াতির মাধ্যমে খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের গভীর যোগসূত্র আছে।
খাস জমি জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ভুয়া জাল হোল্ডিং খুলে তা অনলাইনে অনুমোদন করেছে এই ভূমি কর্মকর্তা। তিনি এখনো বহাল তবিয়তে উপজেলার বড় বিহানলী ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। নেই প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নির্বিঘ্নে চলছে অনলাইন ঘুষের মহোৎসব।
সরকারি সূত্রমতে, কেউ সরকারি খাস জমি পেতে হলে এসিল্যান্ড ,ইউএনও , ডিসি’র অনুমোদন সাপেক্ষে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু মোস্তাফিজুর নামের তহশীলদার কোনকিছুর তোয়াক্কা না করেই একটি চক্রের মাধ্যমে এসব কাজ গোপনে করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তিরা বলেন, অনলাইনে খাজনা দিতে রেজিস্ট্রেশন ফি প্রত্যেকের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩০০ টাকা। এছাড়া ১০ টাকা খাজনার চেকে ৪০০-৫০০ টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে এই অফিসে হয়না এমন কাজ নাই ।
কার জমি কাকে কাগজ করে দিচ্ছে তার ঠিক নাই। কেউ কেউ বলেন , উপজেলা ভূমি অফিসের , ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একটি চক্র সরকারি জমি আত্মসাৎ করতে এই কাজগুলো করে থাকে। বড় বিহানালি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এসিল্যান্ড স্যার যে ছয়টি চিঠি দিয়েছে এটাও তার মধ্যে আছে এগুলো সব স্থগিত করা হয়েছে।
তবে ভূমি অফিসের লোকজনও জড়িত থাকতে পারেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যা উঠে আসবে, আমি সেটিই জানাব এসিল্যান্ডকে। জমি জরিপের সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেককেই ডেকে এনে ওই কাজ দেওয়া হয়েছিল। যারা ডেটা এন্ট্রি করেছে, তারাও জড়িত থাকতে পারে।
বাগমারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী বলেন, কয়েক বছর ডিজিটাল ভূমি জরিপের সময় ভুল করেও কাজটি হতে পারে। তবে অনলাইন খাজনা পরিশোধ করা হলেও তার কোনো নথি আমাদের কাছে নেই। এ কারণে অনলাইন থেকে ওই নামগুলো আমরা মুছে দিয়েছি। জমিগুলো কেউ এখনো দখল করতেও পারেনি। তারপরও আমরা সতর্ক আছি।