নাটোরে টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে রাখা মরদেহ ২২ মাস পর উদ্ধার

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টারঃ

হত্যাকাণ্ডের ২২ মাস পর টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে রাখা মাফিজুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (৩ মার্চ) জেলার গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বালিকা মাদরাসার টয়লেটের মেঝে খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মাফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া মহল্লার আজাদ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পেশায় রঙ মিস্ত্রি ছিলেন।

এ সময় গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম, ক্রাইম অ্যান্ড অবস বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক খুরশেদ আলম, সিংড়া-গুরুদাসপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামান, চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান ও গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল পরকীয়া প্রেমিক মাফিজুলকে বাসায় নেয় তাহের খলিফা। রাত ১১টার দিকে ওই বাড়িতে গেলে তিনিসহ আল-হাবিব ও আশরাফুল ইসলাম মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ বাড়ির পাশের দাখিল মাদরাসার নির্মাণাধীন টয়লেটের মেঝের বালু খুঁড়ে পুঁতে রাখা হয়। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ৭ মে গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মাফিজুলের মা।

পরে শুক্রবার তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের মা মাহিনুর বেগম। মামলায় তাহের খলিফা (৬৫), আল-হাবিব (৩৯) ও আশরাফুলকে (৪৫) আসামি করা হয়। পুলিশ পরকীয়া প্রেমিকাকে গ্রেফতার করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম বলেন, স্বামীর অগোচরে মফিজুলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ে পড়েন ওই নারী। বিষয়টি তার দ্বিতীয় স্বামী আল-হাবিব জানলে কলহ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তারা পরকীয়া প্রেমিক মাফিজুলকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

সিংড়া-গুরুদাসপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালে হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হলেও ২০২৩ সালে স্বামীর সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। আল-হাবিবের নামে যৌতুকের মামলা করলে সে মামলায় জেলহাজতে থাকা অবস্থায় একজনের কাছে মফিজুল হত্যার কথা স্বীকার করেন। জামিনে বেরিয়ে এসে ওই ব্যক্তি বিষয়টি প্রকাশ করলে হত্যা মামলা রুজু হয়।

মামলার বাদী মাহিনুর বেগম বলেন, নিখোঁজের পর থেকে পথ চেয়ে বসে থাকি। বিশ্বাস ছিল ছেলে ফিরে আসবে। তবে লাশ হয়ে ফিরবে এটি তিনি মানতে পারছিন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *