নাটোরে র‌্যাবের জব্দ করা হেরোইন হয়ে গেল আচারের প্যাকেট

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রায় তিন বছর আগে র‌্যাবের জব্দ করা এক কেজি ২৯০ গ্রাম হেরােইন আলামত খুলে দেখা গেছে সেগুলো আচারের প্যাকেট। ঘটনাটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

ব্যাখ্যা দিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ২৫ জুলাই স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শরীফ উদ্দিন।

জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটার(পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নাটোর সদর উপজেলার একডালা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি করে র‌্যাব-৫ এর সদস্যরা।

তল্লাশীকালে মাসুম নামে এক যুবকের কাছ থেকে ৭টি প্যাকেটে থাকা এক কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইন সদৃশ পাউডার জব্দ করে র‌্যাব সদস্যরা। এসময় আটক করা হয় মাসুম নামে একজনকে।

এ ঘটনায় র‌্যাবের ডিএডি রাজিব বাহাদুর বাদি হয়ে নাটোর সদর থানায় মাদক আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মাসুম বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। সেই মামলা (এজহার) দাখিল পরবর্তী সময়ে তদন্ত ও সিএস (চাজশিট) হয়।

ইতোমধ্যে মামলার ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ১১ জুলাই সেই মামলার যুক্তিতর্কের( আরগুমেন্টের) দিন ধার্য ছিল।

তার আগে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শরীফ উদ্দিনকে করা আসামির অনুরোধে খোলা হয় সিলগালা করা আলামতের প্যাকেট। আলামতের ওই প্যাকেট থেকে সাতটি প্যাকেট খুলে দেখা যায়, সেগুলো আচারের প্যাকেট সদৃশ্য বলে জানান পিপি সিরাজুল ইসলাম।

পিপি সিরাজুল ইসলাম আরো জানান, যুক্তিতকের্রর আগের দিন সোমবার ১০ জুলাই মাননীয় জেলা জজ মহদয় কারাগার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

পরিদর্শনে যাওয়ার পর ওই মামলার আসামি মাসুম জেলা জজ মহোদয়কে অনুরোধ করেন মাননীয় জেলা জজ মহোদয়, আপনি আমাকে সাজা দেন, সব করেন, আপত্তি নেই।

কিন্তু আলামতগুলো ওখানে আছে, ওই আলামতগুলো যদি আপনি দেখেন তাহলে আমার জন্য একটু সুবিধা হয়। আপনি দয়া করে আলামতটা খুলে দেখেন।

যুক্তিতর্কের দিন যখন আমরা আরগুমেন্টের জন্য উপস্থিত হই, ঠিক সেই সময় তিনি (জেলা দায়রা জজ) বলেন, আলামতগুলো খুলে দেখতে হবে, সেখানে কী আছে?

সেই আলামততের সিলগালা খুলে দেখা যায় যে, ১২৯০ গ্রাম গ্রাম হেরোইন, এই হেরোইনের সাতটি প্যাকেট বলা হয়েছে, সেই সাতটি প্যাকেট ঠিকই আছে, কিন্তু সাতটি প্যাকেট খুলে দেখা যায়, সেগুলো আচারের প্যাকেট সাদৃশ।

আচারের প্যাকেট সাদৃশ্য বস্তু দেখে উপস্থিত সকলেই বিস্মিত হন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে এ বিষয়ে আইও (তদন্ত কর্মকর্তা) সাহেবকে জানানো হয়েছে।

তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে এসে এর ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানান পিপি সিরাজুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *