বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ যেভাবে পড়তে হয়

ইসলাম

ইসলামীক ডেক্সঃ

ইসতিসকার নামাজ অর্থ বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ। নবিজি বৃষ্টির প্রার্থনার জন্য এ নামাজ পড়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন অতি সাধারণ পোশাক পরিধান করে, বিনত-বিনম্র অবস্থায় আল্লাহর কাছে নিবেদন করতে করতে ইসতিসকার নামাজের জন্য বের হলেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৬৫, সুনানে তিরমিজি: ৫৫৮)

দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হলে নবিজির (সা.) অনুসরণ করে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব।

ইসতিসকার নামাজ আদায়ের পদ্ধতি হলো, ইমাম মুসল্লিদের নিয়ে কোনো খোলা প্রান্তরে নামাজের আয়োজন করবেন। জামাতের সাথে আজান ইকামাত ছাড়া দুরাকাত নামাজ আদায় করবেন। নামাজে উচ্চৈস্বরে কেরাত পাঠ করবেন। নামাজের পর ইমাম খুতবা দেবেন, খুতবার শুরুতে চাদর ঘুরিয়ে দেবেন। খুতবার পর কেবলার দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে দুহাত তুলে দোয়া করবেন।

বৃষ্টি না হলে এভাবে টানা তিন দিন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব।

  • ইসতিসকার দোয়া

    আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য মাঠে গিয়ে নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দোয়াটি পড়েছিলেন,الْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مَلِكِ يَوْمِ الدِّينِ لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ اللَّهُمَّ أَنْتَ اللهُ لَا إِلَهَ إِلَا أَنْتَ الْغَنِيُّ وَنَحْنُ الْفُقَرَاءُ أَنْزِلْ عَلَيْنَا الْغَيْثَ وَاجْعَلْ مَا أَنْزَلْتَ لَنَا قُوَّةً وَبَلَاغًا إِلَى حِينٍ

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহি রব্ববিল আলামীন, আররহমানির রাহীম, মালিকি ইয়াওমিদ্দীন, লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ইয়াফআলু মা ইউরীদু আল্লাহুম্মা আনতা-লল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল-গানিয়্যু ওয়া নাহনুল ফুক্বারাউ, আনযিল আলায়নাল-গয়সা ওয়াজআল মা আনযালতা লানা ক্যুওয়াতান ওয়া বালাগান ইলা- হীন

অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহর। তিনি সারা বিশ্বের পালনকর্তা, মেহেরবান ও ক্ষমাকারী। প্রতিদান দিবসের মালিক। আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মাবুদ নেই। তিনি যা চান তা-ই করেন। হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই। তুমি অমুখাপেক্ষী আর আমরা কাঙ্গাল, তোমার মুখাপেক্ষী। আমাদের ওপর তুমি বৃষ্টি বর্ষণ করো। আর যা তুমি অবতীর্ণ করবে তা আমাদের শক্তির উপায় ও দীর্ঘকালের পাথেয় করো। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৭৩)

বৃষ্টি প্রার্থনায় আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরও একাধিক দোয়া বর্ণিত রয়েছে। আমর ইবনে শোয়াইব থেকে বর্ণিত রয়েছে তিনি তাঁর পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন যে তার দাদা বলেছেন, নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৃষ্টির জন্য দোয়া করার সময় বলতেন,

اللَّهُمَّ اسْقِ عِبَادَكَ وَبَهِيمَتَكَ وَانْشُرْ رَحْمَتَكَ وَأَحْيِ بَلَدَكَ الْمَيِّتَ

উচ্চারণ: আল্লহুম্মা-সক্বি ইবাদাকা ওয়াবাহীমাতাকা ওয়া-নশুর রাহমতাকা ওয়া আহয়ি বালাদাকাল মাইয়্যিত

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দাদেরকে, তোমার পশুদেরকে পানি দান করো। তাদের প্রতি তোমার করুণা বর্ষণ করো। তোমার মৃত জমিনকে জীবিত করো। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৭৬)

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একদিন নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে কতিপয় লোক (বৃষ্টি না হওয়ায়) ক্রন্দনরত অবস্থায় এলে তিনি দোয়া করলেন,

اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مُغِيثًا مَرِيئًا نَافِعًا غَيْرَ ضَارٍّ عَاجِلاً غَيْرَ آجِلٍ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা-সকিনা গাইসাম-মুগীসাস-মারিআন-নাফিআন গাইরা যাররিন আজিলান গাইরা আজিলিন

অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদেরকে বিলম্বে নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষল ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করুন।

বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়ার পরপরই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায়। (ইবনে খুযাইমাহ: ১৪১৬)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *